স্বাগতম আপনাদের নতুন আর একটি ব্লগে। আজকে আমরা আলোচনা করব Graphic Design-কি, এটি কত প্রকার এবং ডিজাইনের জন্য কি কি Software ব্যাবহার করা হয়? তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
গ্রাফিক্স ডিজাইন শব্দটি গ্রাফিক্স এবং ডিজাইন দুটি আলাদা শব্দ নিয়ে গঠিত। গ্রাফিক্স শব্দটি আর্ট, কল্পনা ও প্রকাশ দ্বারা গঠিত উদাহরন স্বরুপ বলাযায় অংকন করা, খোঁদায় করা নকশা, লেখনি ইত্যাদি গ্রাফিক্সের অন্তর্ভূক্ত।
ডিজাইনঃ যখোন কোন কাল্পনিক আর্টকে আমরা কোন সার্ফেস বা তলে লাইন, সেপ, টেক্সার, ফর্ম, টাইপোগ্রাফি ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ করি তখন সেটাকে ডিজাইন বলে।
অর্থাৎ ডিজাইন হলঃ যখোন আমরা কোন কাল্পনিক আর্টকে সার্ফেস, পৃষ্ঠে বা তলে লাইন, সেপ, টেক্সার, ফর্ম, টাইপোগ্রাফি ইত্যাদির মাধ্যমে বাস্তব রুপ প্রদান করি তখন তাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন বলে।
গ্রফিক্স ডিজাইনের প্রকারভেদঃ
প্রথমত গ্রাফিক্স ডিজাইন ২টা ভাগে ভাগ করা যায়
১।স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স
২।মোশান গ্রাফিক্স
স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্সকে আবার ৪ ভাগে ভাগ করা যায়
১।রাস্টার ইমেজ(পিক্সেল বেসিস)
২।ভেক্টর ইমেজ(পিক্সেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট)
৩।টাইপোগ্রাফি(২রকমের হয়ে থাকে)
মোশান গ্রাফিক্স প্রধানত ২ প্রকার
১।এনিমেশান গ্রাফিক্স
২।ভিডিও গ্রাফিক্স
ডিজাইন করতে ২ ধরনের জিনিস প্রয়োজন হয়।
১। এলিমেন্টস
২। ইকুইপমেন্ট
এলিমেন্টস অফ ডিজাইনঃ
- Lines
- Shapes
- Colors
- Textures
- Spaces
- Line(রেখা): ডিজাইনের ক্ষেত্রে এর লাইন বা রেখাটি কেমন হবে সোজা না চিকন বা পুরু ও সরু তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রকার বা প্রকৃতি কেমন দাঁড়াবে তা অনেকটাই লাইনের উপর নির্ভর করে। একটি পুরু রেখা বালক বা কিশোরদের মনোভাব ফুটিয়ে তোলে আবার একটি সোজা বা চিকন লাইন অনেক বেশি পরিশুদ্ধ ও বোধশক্তি সম্পূর্ণ। দুটি লাইনের মধ্যে কিভাবে পরস্পর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হবে তাও গুরুত্বপূর্ণ।
- Shapes(আকৃতি বা গঠন): কোন একটি ডিজাইনের গঠন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এর দ্বারা বোঝা যায় যে নকশাটির আলোচ্য বিষয় কি নিয়ে। কোনযুক্ত যেমন চারকোণা বা ত্রিভুজ আকৃতির ডিজাইন পুং জাতীয় বিষয়কে বোঝায়। আবার সমতল বা বক্র রেখাগুলো স্ত্রী জাতীয়। চারকোণা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত একটি আকার ফলে এটা অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য ও স্থায়ী। আর গোলাকৃতির ডিজাইন আহলাদিত, শান্তিপ্রিয় ও ঐক্যতার রূপ তুলে ধরে।
- Color( রং): একটি ডিজাইনের ক্ষেত্রে রংয়ের প্রভাব অনেক বেশি। এটি কেমন রূপ বা আকৃতি ধারণ করবে তা অনেকটাই নির্ভর করে রংয়ের উপর। যেমন লাল রং খুব কঠিন ও কড়া একটি প্রভাব বিস্তার করে যা ভালোবাসা, রাগ এবং উত্তেজনাকে বোঝায়। নীল ও সাদা রংয়ের ডিজাইনটির মধ্যে এক ধরনের শান্ত, শান্তিপ্রিয়, সুশীল এবং শুভ্রতা প্রকাশ পায়।
- Textures(গঠন বিন্যাস): টেক্সচারের মাধ্যমে ডিজাইনের বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলা হয়। চাক্ষুস সৌন্দর্য্য তুলে ধরতে এর কার্যকরী অনেক। এটি একটি ডিজাইনকে অনেক বেশি সুলভ ও তুলনাহীন করে তোলে।
- Spaces(স্থান): গ্রাফিক্সের ক্ষেত্রে স্থান মূলত একটি সুশীল ও সমৃদ্ধ বিষয়কে বোঝায়। ডিজাইনের যে অংশটি দেখলে চোখের শান্তি হবে যা দৃষ্টিসুলভ। যে নকশা যত হালকা তার ব্যাপ্তি তত বেশি। জায়গার অসৎ ব্যবহার একটি ডিজাইনকে কুৎসিত ও অসুভ করে তুলতে পারে। আবার ডিজাইনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি খালি জায়গা থাকলে তা অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে। ফলে ভেবেচিন্তে জায়গার যথাযথ ব্যবহার করা উচিত।
ইকুইপমেন্ট অফ ডিজাইন:
- Pencil
- Eraser
- Ruler etc.
- Pencil(পেন্সিল): পেন্সিল মূলত ড্রইং করার কাজে ব্যবহার করা হয়। একজন ডিজাইনারকে ফাইনাল ডিজাইন করার পূর্বে স্ক্যাচ বা ড্রইং করে নিতে হয়। আর ড্রইং করার জন্য পেন্সিল প্রয়োজন।
- Eraser( রাবার): এটি মূলত ড্রইং বা স্ক্যাচ করার সময় ড্রইং এর অতিরিক্ত বা অযাচিত অংশ মুছে দিতে ব্যাবহার করা হয়।
- Ruler(রুলার): রুলার দিয়ে বর্ডার বা লাইন টানার কাজ করা হয়।
আমরা কি কি সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করবোঃ
- Adobe Photoshop
- Lightroom
- illustrator
- InDesign
- Dimension etc
- Wilcom Embroidery Studio
- Quark Express
- CorelDRAW
- Blender 3D
- AutoCAD
- Adobe Photoshop (অ্যাডব ফটোশপ): পৃথিবীতে Graphic Software – এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যারটি হচ্ছে Adobe Photoshop। এটা মূলত Photo Editing Software. কিন্তু বেশ কয়েক বছড় ধরে এটি ডিজাইনের কাজে বেশ জনপ্রিয়ো হয়ে উঠেছে।
- Adobe Lightroom(অ্যাডব লাইটরুম): এটি মূলত Adobe Photoshop-এর একটি সহায়ক সফটওয়্যার। এটি Photo editing এর কাজে এবং বিভিন্ন ধরনের স্পেসাল Effect এর কাজে ব্যাবহার করা হয়।
- Adobe illustrator(অ্যাডব ইলাস্ট্রেটর): Drawing এবং Design এর কাজের জন্য বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যার হচ্ছে এটি। Print Design-এর কাজ খুব সহজেই করা যায় এটার সাহায্যে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ ডিজাইনার তাদের ডিজাইনের কাজে Adobe illustrator ব্যাবহার করে।
- Adobe InDesign (অ্যাডব ইন ডিজাইন): এই Software – টি মূলত Publishing Software. বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনার কাজে এটি বেশি ব্যাবহার করা হয়। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশেও এটি বেশ জনপ্রিয়ো হয়ে উঠেছে এটি।
- Adobe Dimension(অ্যাডব ডাইমেনশন): এই Software – টি একেবারেই Adobe – এর নতুন সংযোজন। এটা অনেকটা Blender 3D Software এর আদলেই তৈরি। এটির সাহায্যে খুব সহজেই 3D Mockup তৈরি করা যায়।
- Wilcom Embroidery Studio: এই Software – টা মূলত Embroidery Design Software. এটা আমাদের দেশে খুব একটা ব্যাবহার করা হয় না।
- Quark Express: এই Software টি অনেক বছর ধরে Publishing – এর কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। এই Software – টা অনেক জনপ্রিয় আমাদের দেশে।
- CorelDRAW: এটি মূলত Vector Based Graphic Software. Adobe Illustrator – এর বিকল্প হিসেবে মূলত এই Software ব্যাবহার করা হয়।
- Blender 3D: 3D Model তৈরি করার কাজে বেশ জনপ্রিয় একটি ফ্রি Software। ধিরে ধিরে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। Product এর মডেল তৈরি এবং Mockup Presentation তৈরি করতে এটি বেশি ব্যাবহৃত হয়।
- AutoCAD: AutoCAD – এই Software টি ও অনেক জনপ্রিয় একটি Software. এটি সাধারনত Engineering সেক্টরে বেশি ব্যাবহার করা হয়। এটার সাহায্যে 2D এবং 3D দুই ধরেনের কাজ করা যায়।
Software শেখার পরে আমাদের যেটা করতে হবেঃ
♦ ধাপঃ১
ভালো ডিজাইনারদেরে প্রফেশনাল কাজগুলো দেখে দেখে প্যাকটিস করতে হবে। আসে পাসের অন্যদের প্রফেসনাল কাজগুলো ফ্রিতে করে দিন। অনেকগুলো রিয়েল প্রজেক্ট করলে মোটামুটি কনফিডেন্ট তৈরি হবে।
♦ ধাপঃ২
ধাপঃ২ এবং ধাপঃ ৩ এর পর আপনি মোটমুটি কাজ শিখে গেছেন। এবার আপনাকে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেসে কনটেস্টে জয়েন করতে হবে। এভাবে প্রফেসনাল মানের কাজ করতে করতে আপনি নিজেও প্রফেসনাল হয়ে উঠবেন।
♦ ধাপঃ৩
এই ধাপে আপনাকে নিজের কাজগুলোকে অবশ্যই মানুষের সামনে নেওয়ার জন্য পোর্টফোলিও তৈরি করতে হবে। পোর্টফোলিও তৈরি করতে আপনি একটি পার্সোনাল ওয়েবসাইটও তৈরি করে নিতে পারেন অথবা Behance, Dribble ইত্যাদি যেসব পোর্টফলিও ওয়েবসাইট আছে আপনি সেগুলিতেও আপনার কাজ আপলোড করতে পারেন।
আজ এ পর্যন্তই, আগামিতে আবারও হাজির হব নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সবার সু-সাস্থ কামনা করছি।